Chenopodium album হলো সবুজ বথুয়ার উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম । নেটিভ আমেরিকান Chenopodium শব্দটি এসেছে ক্যালিফোর্নিয়ার বথুয়া-বিখ্যাত অঞ্চল Chualar নামানুসারে আর album বলতে গ্রীক অর্থে সাদাটে-যা ফুল ও কুঁড়িপাতা কেন্দ্রের কারনে হতে পারে । নিজস্ব ফ্যামিলি হিসেবে Chenopodiaceae এর অন্তর্গত হলেও বথুয়ার অপর সাধারণ নাম পিগউইড হিসেবে আধুনা উদ্ভিদ বিজ্ঞানীগন ইহাকে বৃহত্তর Amaranthaceae পরিবারে সীমাবদ্ধ রাখতে আগ্রহী । সকল শাকের সিদ্ধ-কৃত পানি নিঙড়ে ফেলতে বলা হয় শুধু বথুয়া ব্যতীত আর বথুয়া পাতা মাছের পুকুরে ফেলতে নেই । কারন এর ‘স্যাপোনিন’ মানুষে খুবই কম মাছে বেশী শোষিত হয় । ইহা কিছুটা লবনাক্ত মাটিও সহ্য করতে পারে আবার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৬০০ মিটার উচ্চতাতেও জন্মে; জন্মে আধা-মরুভূমিতেও ।
বথুয়ার অব্যর্থ ১২ উপকার (ঐতিহ্যগত আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় বাথুয়ার মর্মভেদ):
(১) বথুয়ার ভিটামিন বি ও সি যথাক্রমে ত্বকের চুলকানী রোধ ও স্কার্ভি রোগ সারায় (২) প্রস্রাবের জ্বালা-পোঁড়ায় মোটামুটি ২০০-৩০০ গ্রাম বথুয়া বেটে ২ গ্লাস পানিতে ছেঁকে ২ চামচ জিরার গুঁড়ো ও ২ চামচ লেবুর রসের মিশ্রিত শরবত দিনে অন্তত দু’বার (৩) বথুয়া অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান সমৃদ্ধ ও ত্রিদোষনাশক(কফ-পিত্ত-বায়ু) (৪) পেট ব্যথা তথা পুরাতন আমাশয়-ডায়রিয়া,কৃমি নাশ ও মেধা বিকাশ করে (৫) কাঁচা বথুয়া চিবিয়ে বা হালকা করে রান্না করে খেলে মুখের ঘা চট-জলদি সেরে যায় (৬) বথুয়া রক্ত বর্ধক ও অনিয়মিত পিরিয়ড সমস্যা সমাধান করে (৭) গ্রামাঞ্চলে মেয়েরা বথুয়ার রস দিয়ে উকুন নাশ করে (৮) বথুয়ায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ৮টি অ্যামাইনো এসিড (৯) গরম পানিতে ত্বক পুড়ে গেলে বা ফোস্কা পড়লে বথুয়া বেটে আলতো করে প্রলেপ লাগালে জ্বালা ভাব দ্রুত কমে যায় (১০) ১ চা চামচ চিনিসহ ১ গ্লাস বথুয়া শাকের জুস বা শরবত ১০ দশ দিন এবং আশান্বিত থাকুন কিডনির পাথর গলতে শুরু করবে (১১) বিষাক্ত পোকা-মাকড় কামড়ালে বা হুল ফুটালে বথুয়া পাতা রসে তা উপশম হয় (১২) আকাশে মেঘ ডাকলে অনেকের পেটের ভিতরও গুড়গুড় শব্দ করে; আসলে সম্পর্কটা ঠিক মেঘ ডাকার সঙ্গে নয় বরং বর্ষায় অনেকেরই হজমশক্তি লোপ পায় যেমন গ্রীষ্মকালে ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়-এ সব কারনেই বথুয়ার বড় দরকার । গুণাবলী অসাধারণ বলেই আয়ুর্বেদ ও লোকায়ত ব্যবহারে বথুয়ার বিকাশ অধিক গবেষণার দাবী রাখে ।